Resilience: বিপর্যয় কাটিয়ে স্বাভাবিক জীবনে প্রত্যাবর্তন

Share


শুভ খুব ভাল একজন ছাত্র। সে বড় হয়ে একজন রসায়নবিদ হতে চায়; কিন্তু তার পরিবার চায় সে ডাক্তার হোক। শুভর রসায়নবিদ হওয়ার ইচ্ছাটাকে পরিবার গুরুত্ব দেয়না। এইচ.এস.সি পরীক্ষার পর শুভ পরিবারের চাপের মুখে মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়ার প্রস্তুতি নিতে থাকে। এরই মধ্যে এইচ.এস,সি পরীক্ষার রেজাল্ট দিলে দেখা যায় ভালো পরীক্ষা দেওয়া সত্ত্বেও সে এ+ পায়নি। পরিবার থেকে তাকে নিয়মিত বকাঝকা ও অপমান করা শুরু হয়। মানসিকভাবে পরিবারের সাপোর্ট না পেয়ে সে খুব ভেঙে পড়ে। অবস্থা আরও খারাপ হলো যখন সে কোনো ভার্সিটিতে চান্স পেলোনা। বন্ধুবান্ধব যারা বিভিন্ন ভার্সিটিতে চান্স পেয়েছিলো তারাও শুভকে নিয়ে হাসিঠাট্টা করতে লাগলো। পরিবার, আত্নীয়-স্বজন ও বন্ধুবান্ধব সকলের অবহেলায় সে খুব আইসোলেটেড ফিল করতে লাগলো। স্বাভাবিক জীবন যাপন করা শুভর জন্য কঠিন হয়ে উঠলো। তার মধ্যে ভয়, উদ্বেগ, আশাহীনতা, রাগ ইত্যাদি নেতিবাচক ইমোশনগুলো দিনকে দিন বেড়েই যেতে লাগলো। শুভর মনে হতে লাগলো বেঁচে থাকার চেয়ে মরে যাওয়াই ভালো।

শুভর বড় বোন তার মধ্যে এই একাকীত্ব, পরিবেশের সাথে খাপ খাওয়াতে না পারা, হতাশাগুলো লক্ষ্য করেন এবং তিনি শুভকে একজন সাইকোলজিস্টের কাছে নিয়ে যান। নিয়মিত কাউন্সেলিং ও বড় বোনের অনুপ্রেরণা পেয়ে শুভ প্রতিকূল অবস্থা থেকে স্বাভাবিক জীবনে প্রত্যাবর্তনের জন্য চেষ্টা শুরু করে।

ওপরে আমরা শুভর ক্ষেত্রে তার ক্ষতি কাটিয়ে উঠে পরিবর্তিত অবস্থাতে খাপ খাওয়ানোর যে চেষ্টা দেখতে পাই তাকে বলা হয় রেজিলিয়েন্স।

রেজিলিয়েন্স হলো সংকটপূর্ণ অবস্থায় নিজেকে মানিয়ে নিয়ে স্বাভাবিক অবস্থায় প্রত্যাবর্তন করার একটি প্রক্রিয়া।

যেসব ব্যাক্তিদের মধ্যে রেজিলিয়েন্স বা পরিবর্তিত অবস্থাতে মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা বেশি থাকে তারা সংকটপূর্ণ অবস্থাতে শান্ত থাকতে পারে যা তাদেরকে পরিস্থিতি বুঝে কাজ করতে সাহায্য করে। আর যাদের মধ্যে রেজিলিয়েন্স কম থাকে তাদের মধ্যে পরিবর্তিত অবস্থাতে নিজেদের খাপ খাওয়ানোর ক্ষমতা কম থাকে।

সম্পর্কের ভাঙন, কাছের কোনো মানুষের মৃত্যু, প্রাকৃতিক বিপর্যয়, পেশাদারী ব্যর্থতা, শারীরিক অক্ষমতা, শারীরিক নির্যাতন ইত্যাদি যেকোনো কারণে ব্যক্তি দীর্ঘসময় ধরে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত থাকতে পারে; যেটা তার স্বাভাবিক জীবনযাপনের জন্য হুমকিস্বরূপ। পরিবর্তিত অবস্থাটাকে স্বীকার করে নেওয়াটা একজন বিপর্যস্ত ব্যক্তির জন্য খুবই জরুরী।

পরিবারের সহযোগিতাপূর্ণ মনোভাব, সামাজিক নিরাপত্তা, অভিযোজন কৌশল, নিয়মিত কাউন্সিলিং সেবা ইত্যাদি ব্যক্তির মধ্যে রেজিলিয়েন্স বাড়াতে সাহায্য করে। আমাদের কাছের বন্ধুবান্ধব বা পরিবারের সদস্যই  হয়তো আছে যাদের রেজিলিয়েন্স কম থাকার কারণে জীবনে এগোতে পারছে না। আমারদের সকলের সহায়তাই পারে তাদেরকে সুস্থ সুন্দর জীবন দিতে।

অন্তরা অন্তু

Loved this article? Share with your community and friends.

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share