হোপ অটিজম সেন্টার

Share

হোপ অটিজম সেন্টার – অটিস্টিক শিশুদের জীবনযাত্রার উন্নতির জন্য একটি আশার আলো।

ঢাকার কলাবাগানে অবস্থিত এই জন্য একটি দাতব্য সংস্থাটি  অটিস্টিক স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডার (Autistic Spectrum Disorder) এবং অন্যান্য মেধাবিকাশ জনিত সমস্যার সম্মুখীন শিশুদের জন্য বিভিন্ন সেবা প্রদান করে, যা তাদের স্পিচ, সামাজিক ইন্টারেকশন  উন্নত করতে এবং একাডেমিক দক্ষতা বিকাশের জন্য বিভিন্ন কর্মসূচিতে সাহায্য করবে।

হোপ অটিজম সেন্টার এর  প্রতিষ্ঠাতা ডঃ নুসরাত আহমেদ ইটস ওকে বাংলাদেশকে বলেন, “হোপ অটিজম সেন্টার এ, আমরা আমাদের  শিক্ষার্থীদেরকে দৈনন্দিন জীবনযাত্রার বিভিন্ন দ্বন্দের সম্মুখীন হয়ে তাকে জয় করতে তৈরি করি। আমরা প্রতিদিন তাদের ডেটা সংগ্রহ করি, যাতে প্রতিটি শিশুর জন্য আলাদা করে তার প্রয়োজন এর উপর ভিক্তি করে ইম্প্রুভমেন্ট প্রোগ্রাম তৈরি করতে পারি। “
কেন্দ্রটি তাদের শিক্ষার্থীদেরকে পড়াশোনার পাশাপাশি দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন কাজ করা, সবার সাথে মেলামেশাসহ আরো অন্য সব কাজ শেখায়, যা শিশুর মানসিক বিকাশে সাহায্য করে। একটি শিক্ষার্থী যখন প্রচলিত স্কুলে যায়, তখন তারা যাতে সহজেই পড়াশোনা আর পারিপার্শ্বিক পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে পারে, এই দিকে বিশেষ খেয়াল রাখা হয়।  “আমাদের একজন ছাত্র সম্প্রতি ক্লাস ৬ এ উঠেছে!” খুবই উৎসাহের সাথে বললেন ডঃ নুসরাত। যদিও এইসব ক্ষেত্রে বাচ্চাদের প্রায়ই বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হয়। “কখনও কখনও তারা হতাশ হয়ে পড়ে, এমনকি ডিপ্রেশন এও পড়ে যেতে পারে, হয়ত কোন সহপাঠী তাদের নিয়ে মজা করল বা পড়া বুঝতে পারল না। আমরা এই ধরনের কেইসে বিশেষ যত্ন নেওয়ার চেষ্টা করি এবং তাদের আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর চেষ্টা করি।”
বাস্তবে আসলে আমাদের অধিকাংশ নিয়মিত স্কুলই অটিস্টিক শিক্ষার্থীদেরকে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকে না। যার ধারাক্রমে স্কুলের বা প্রতিষ্ঠানের অনান্য বাচ্চারাও তাদেরকে স্বাভাবিকভাবে নিতে বা মিশতে শেখে না।
হোপ অটিজম সেন্টারের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ সেবা হচ্ছে তাদের  আন্তর্জাতিক মানের প্রাথমিক হস্তক্ষেপ (Early intervention ) সেবা। “প্রথম দিকে হস্তক্ষেপ এমন শিশুদের সাহায্য করার জন্য সবচেয়ে বড় হাতিয়ার হতে পারে। দুই বছর বয়সের আগে প্রাথমিক হস্তক্ষেপ আর ডায়াগনোসিস এই সব কেইসে  উন্নয়নের জন্য একটি দুর্দান্ত সুযোগ দেয়।” কেন্দ্রটি বাংলাদেশের একমাত্র সংস্থা যেখানে অটিস্টিক শিশুদের জন্য প্রাথমিক সাপোর্টেড ডিসিশন মেকিং (Supported Decision Making ) অনুশীলন করার জন্য কাজ করা হয়।
হোপ অটিজম সেন্টারে অটিজম সংক্রান্ত আরো যা যা সেবা প্রদান করা হয়ঃ
ক্লিনিক্যাল সার্ভিসেস:
– আন্তর্জাতিকভাবে ব্যবহৃত ডায়গনিস্টিক মানদণ্ড নিম্নলিখিত ডায়াগনস্টিক মূল্যায়ন
– সম্পর্কিত মেডিকেল শর্তাবলী জন্য মেডিকেল পরামর্শ
– চিকিত্সা প্রয়োগে সহায়তা করতে ফলো-আপ পরামর্শ
পরামর্শ সেবা:
– পারিবারিক পরামর্শ নির্দিষ্ট আচরণগত / একাডেমিক উদ্বেগ মোকাবেলা
– উপযুক্ত হোম ম্যানেজমেন্টের জন্য পরামর্শ
স্কুল প্রোগ্রাম:
– মৌলিক আলাপ-চারিতার দক্ষতা
– সামাজিক দক্ষতা
– প্রাক-একাডেমিক দক্ষতা
– দৈনিক জীবন কার্যক্রমের দক্ষতা
– পেশাগত থেরাপি
জনসংযোগ কর্মসূচি:
-প্রাথমিক মূল্যায়ন
– ঢাকা শহরের বাইরে থেকে শিশুদের ও পিতামাতার সঙ্গে দীর্ঘদিনের কাজের সেশন (নির্দিষ্ট সময় এবং পরিবারের উপর নির্ভর করে)
– বাড়ীতে হস্তক্ষেপ চালিয়ে যাওয়ার জন্য বাবা-মা’র ক্ষমতার বিকাশ
প্রশিক্ষণ:
– বাবা-মা এবং প্রশিক্ষকদের জন্য প্রশিক্ষণ কর্মসূচী

শিক্ষা পরিষেবা:
– পিতা-মাতা ও প্রশিক্ষকগণের জন্য বাংলায় ম্যানুয়াল / লিফলেট প্রকাশ

গবেষণা:
– অটিজমের ওপর ফলিত গবেষণা: খাদ্যতালিকাগত এবং অন্যান্য জৈবরাসায়নিক হস্তক্ষেপ
– অটিজমের উপর সামাজিক গবেষণা

এডভোকেসি:
অটিজম সম্পর্কে জনগণের সচেতনতা বৃদ্ধি।

যোগাযোগ এবং আলাপ-চারিতার দক্ষতা:
হোপ অটিজম সেন্টারের নিজস্ব বক্তৃতা উন্নয়ন পদ্ধতি এর মাধ্যমে শিশুদের একটি উদ্দীপক পরিবেশে কোন বলপূর্বক ছাড়া তাদের  বক্তৃতা ক্ষমতার বিকাশে উত্সাহ দেওয়া হয়।
হোপ অটিজম সেন্টার সম্পর্কে আরও জানতে যোগাযোগ করুন:
ঠিকানাঃ
হোপ অটিজম সেন্টার
১৫২/২বি,
গ্রীনরোড, কলাবাগান,
ঢাকা – ১২০৫, বাংলাদেশ।
টেলিফোনঃ
বাংলাদেশ              01715527507
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র    1 503 550 9554
ডঃ নুসরাত আহমেদ 

নুসরাত আহমেদ একজন চিকিৎসক এবং অটিজম এবং মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে বিশেষজ্ঞ। তিনি তার এমবিবিএস করেন ঢাকা মেডিকেল, বাংলাদেশ; ফ্লিন্ডারস ইউনিভার্সিটি অস্ট্রেলিয়ায় (Flinders University Australia) এমএমএইচএসসি (MMHSc) এবং যুক্তরাজ্য থেকে আন্তর্জাতিক অ্যাডোস ট্রেইনার সার্টিফিকেশন (International ADOS trainer certification)।

নুসরাত বর্তমানে সুচনা ফাউন্ডেশনের  গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ব্যবস্থাপক হিসেবে কাজ করছেন। অস্ট্রেলিয়াতে কাজ করার সময় তিনি ল্যাত্রোব  বিশ্ববিদ্যালয়ের (Latrobe University) এএসডি বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করছিলেন এবং তার ভূমিকা ছিল এএসডি এবং / অথবা আইডি এবং পরামর্শের সাথে শিশুদের নির্ণয় করা এবং সেই অনুযায়ী পরিবারকে নির্দেশনা করা। মারডক চিলড্রেন্স রিসার্চ ইনস্টিটিউটে (Murdoch Childrens Research Institute), তিনি ফ্রাগাইল এক্স (Fragile X) সিন্ড্রোমের সাথে কাজ করেন। তিনি পরিবার এবং পেশাদারদের জন্য বেশ কয়েকটি প্রশিক্ষণ পরিচালনা করেন এবং বাংলাদেশ, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য, তাজিকিস্তান, ভারত, কানাডা এবং ভুটানসহ বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন। ডঃ নুসরাত হোপ অটিজম সেন্টার, বাংলাদেশ এর প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক, যা এএসডি সহ ব্যক্তিদের জন্য একটি দাতব্য সংস্থা।

ডঃ নুসরাত নিম্নলিখিত নিবন্ধের লেখক: আহমেদ, এন, ও লন, এস। (২০১২)। জ্ঞানীয় আচরণগত থেরাপি (CBT) এর আচরণগত কম্পোনেন্টের সাথে শুরু কি থেরাপি রোগীদের রক্ষণ বৃদ্ধি? আচরণ পরিবর্তন, ২৯(৪), ২৩৮-২৫৭

Loved this article? Share with your community and friends.

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share