রিনার বাচ্চার বয়স এক মাস হলো। পরিবারে এখনো নবজাতকের আগমনের উৎসব চলছে। সবার আকর্ষণ কেন্দ্র এই বাচ্চা। মা হতে পেরে রিনা খুব খুশি হলেও কিছুদিন হলো তার মেজাজ খিটখিটে। তার কিছুই ভাল লাগে না,সারাদিন মন খারাপ থাকে, প্রায়ই কান্না করে এমনকি বাচ্চার কাজ করতেও বিরক্ত লাগে ইদানিং। রিনা তার আকস্মিক পরিবর্তন বুঝতে পারলেও কিভাবে কার কাছে যাবে বুঝতে পারে না। সাথে তার পরিবারের কেউ তাকে বুঝতে চেষ্টা করে না। হঠাৎ একদিন রিনার বান্ধবী তার বাসায় আসে। রিনার ক্লান্তি মাখা চেহারা দেখে তিনি রিনাকে তার মানসিক অবস্থা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেন। সব কথা শোনার পর উনি বুঝতে পারেন রিনা পোস্ট পার্টাম ডিপ্রেশনে ভুগছে।
লক্ষণ:
রিনার অবস্থাকে মনোবিজ্ঞানীদের ভাষায় পোস্ট পার্টাম ডিপ্রেশন বলা হয়। পোস্ট পার্টাম ডিপ্রেশন সন্তান জন্মের ২ বা ৩ সপ্তাহ পর দেখা দেয়। প্রথমে মনখারাপ, মেজাজ খিটখিটে হয় যেটাকে বেবি-ব্লু বলা হয়। কিন্তু এই লক্ষণ গুলো যখন তীব্র হয়ে যায় এবং এর সাথে আরো অনেক লক্ষণ যোগ হয় যেমন উদ্বেগ, হতাশা, নিজের ও আশেপাশের মানুষের উপর রাগ এবং তাদের এড়িয়ে চলা, প্রচন্ড মুড সুইং, প্রায়ই কান্না করা ইত্যাদি।
রিনার অবস্থাকে মনোবিজ্ঞানীদের ভাষায় পোস্ট পার্টাম ডিপ্রেশন বলা হয়। পোস্ট পার্টাম ডিপ্রেশন সন্তান জন্মের ২ বা ৩ সপ্তাহ পর দেখা দেয়। প্রথমে মনখারাপ, মেজাজ খিটখিটে হয় যেটাকে বেবি-ব্লু বলা হয়। কিন্তু এই লক্ষণ গুলো যখন তীব্র হয়ে যায় এবং এর সাথে আরো অনেক লক্ষণ যোগ হয় যেমন উদ্বেগ, হতাশা, নিজের ও আশেপাশের মানুষের উপর রাগ এবং তাদের এড়িয়ে চলা, প্রচন্ড মুড সুইং, প্রায়ই কান্না করা ইত্যাদি।
কারণ:
মা হওয়ার পর শারীরিক, মানসিক ও বিভিন্ন পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে একজন নারীকে যেতে হয়। শরীরের বিভিন্ন ধরণের হরমনের উঠা-নামার ফলে মূলত একজন মা এই অনুভূতির ভিতর দিয়ে যায়। এর সাথে যোগ হয় মায়ের দায়িত্ব পালন, নির্ঘুম রাত ও পরিবারের থেকে এক ধরণের দায়িত্ব পালনের চাপ ও প্রত্যাশা। এগুলো নতুন মায়ের মধ্যে পোস্ট পার্টাম ডিপ্রেশনের সূচনা করে।
প্রতিকার:
প্রথমে পরিবারের সদস্যদের এগিয়ে আসতে হবে। তাদের সাপোর্ট একজন মায়ের জন্য খুবই জরুরী এবং অনেক সময়ই পারিবারিক সাপোর্টের কারণেই একজন মা এই পোস্ট পার্টাম ডিপ্রেশন থেকে কাটিয়ে উঠতে পারে। কিন্তু যে লক্ষণগুলো উপরে বলা হলো তা যদি মাত্রাতিরিক্ত হয়, ২ সপ্তাহ অতিক্রম করে, প্রতিদিনের কাজে বাধা হয়ে দাড়ায় এবং আত্মহত্যার চিন্তা বা চেষ্টা থাকে (খুবই কম ) তাহলে অবশ্যই প্রোফেশনাল হেল্প বা মনোবিজ্ঞানীর শরণাপন্ন হওয়া প্রয়োজন।
এতক্ষণ মায়েদের কথা বললেও বাবারাও এর থেকে মুক্ত নয়। বাবাদের মধ্যেও এই লক্ষণগুলো দেখা যায় কারণ মায়েদের সাথে তাদেরও জীবনে পরিবর্তন আসে।
প্রায় প্রত্যেক মায়েরাই পোস্ট পার্টাম ডিপ্রেশনের মধ্য দিয়ে যায় যেটি অস্বাভাবিক কিছু নয়। পারিবারিক সহযোগিতাই পারে মায়ের মন ও স্বাস্থ্য ভাল রাখতে। তাই পরিবারের সদস্যদের সহযোগিতামূলক আচরণ করা উচিত।
ভালো রাখি মায়েদের।
নুজহাত জাহানারা